বরিশালে আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে মসজিদের জমি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

NEWSNEWS
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  04:52 AM, 03 January 2022

নিজস্ব প্রতিবেদক: বরিশালের উজিরপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও বরিশাল জেলা পরিষদ সদস্য এস.এম জামাল হোসেনের বিরুদ্ধে উজিরপুর পৌরসভা সদরে বাজার জামে মসজিদের ঈদগাহ ময়দানের ৪ শতাংশ জমি ও জেলা পরিষদ থেকে বরাদ্দকৃত অর্থ থেকে দেড় লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।

এ ছাড়া ঈদগাহ ময়দানের মধ্য দিয়ে বাড়ির বিকল্প রাস্তা নিতে না দেয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে বুধবার বিকেলে হামলা চালিয়ে নির্মানাধীন ঈদগাহর প্রাচীর ভেঙ্গে ফেলেছেন। গত ৩০ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয় লোকজন, মুসল্লী ও মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উজিরপুর পৌর সদরের বৃহৎ বানিজ্যিক কেন্দ্র সংলগ্ন জেএল ৯২ উজিরপুর মৌজার এস,এ খতিয়ান ২২৬, দাগ নং ৮১৫, ৮১৬, সাড়ে ১২ শতাংশ জমিতে ঈদগাহ মাঠ রয়েছে।

বিগত সময়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও বরিশাল জেলা পরিষদ সদস্য এস.এম জামাল হোসেন ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে ঈদগাহ মাঠের ৪শতাংশ জমি দখল করে নেন যার আনুমানিক মূল্য ৪০ লাখ টাকা বলে স্থানীয়রা দাবি করেন। ঈদগাহ ও সরকারি জমি দখল করে তাতে বহুতল পাকা ভবন নির্মান করেছেন।

বর্তমানে কিছু দিন যাবত প্রভাব খাটিয়ে ঈদগাহ মাঠের মধ্য দিয়ে যাতায়াতের রাস্তা নির্মানের পায়তারা করে আসছিল। ঈদগাহ মাঠের জমি দখল নেওয়ার কথা স্বীকার করে মসজিদ ও ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সাধারন সম্পাদক মোঃ অনোয়ারুল্লাহ বলেন, জমি দখল ও বাড়ির বিকল্প পথ না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রাচীর ভেঙ্গে ফেলা দুঃখজনক।

পূর্বে ঈদগাহ মাঠের জমি দখল করে নিয়েছেন এবং জামাল হোসেন বর্তমানে নতুন করে ঈদগাহ মাঠের মধ্য দিয়ে যাতায়াতের পথ নেওয়ার পায়তারা করেছে। তার বাড়িতে যাতায়াতের বিকল্প পথ হিসেবে ব্যবহার করতে নিজ হাতে নির্মানাধীন ঈদগাহ মাঠের প্রাচীর তিনি ভেঙ্গে ফেলেন।

মসজিদ ও ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির কোষাধ্যক্ষ ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর আব্দুল আজিজ সিকদার অভিযোগ করে বলেন, বরিশাল জেলা পরিষদ ঈদগাহ মাঠের প্রাচীর নির্মানের জন্য তিন লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন।

জেলা পরিষদ সদস্য ও আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ জামাল হোসেন ওই বরাদ্দকৃত অর্থ থেকে আমাকে দেড় লাখ টাকা দিয়েছে। শুধু তাই নয়, তার যাতায়াতের পথ বন্ধ হওয়ায় বুধবার বিকেলে প্রাচীর নির্মানের কাজ চলাকালীন সময়ে সে ঘটনাস্থলে পৌছে নির্মান শ্রমিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরন করে।

প্রতিবাদ করলে ক্ষিপ্ত হয়ে এক পর্যায়ে নিজেই নির্মানাধীন প্রাচীর ভেঙ্গে ফেলেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ মুসল্লী ও স্থানীয় লোকজন ঈদগাহ মাঠে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে আওয়ামীলীগ নেতা জামাল হোসেনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ম্লোগান দেন।

পরে পৌর মেয়র ও উজিরপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মোঃ গিয়াস উদ্দিন বেপারী ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি শান্ত করেন। অভিযুক্ত উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এস এম জামাল হোসেন বলেন, আমি ঈদগাহ মাঠে জমি দখল করিনি।

সরকারি জমি লিজ নিয়ে ডিসিআর কেটে বাড়ি নির্মান করেছি। বরাদ্দ দেওয়ার টাকার বিষয় জানতে চাইলে বলেন, জেলা পরিষদ টেন্ডার আহব্বান করে ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দিয়েছে। শুনেছি ওই ঠিকাদার কোষাধ্যক্ষকে দেড় লক্ষ টাকা দিয়েছে। আমি কোন টাকা দেয়নি। নির্মাণাধীন প্রাচীর ভাঙ্গার ব্যাপারে বলেন, কাজের মান খুবই নাজুক হওয়ায় প্রাচীরটি ভেঙে ফেলেছি।

আপনার মতামত লিখুন :