মাছ ধরার জালে আটকে মারা পড়ছে পাখি

NEWSNEWS
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  05:17 AM, 15 December 2021

অনলাইন ডেস্কঃ পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সৈকতের অদূরে গভীর বঙ্গোপসাগরে জেগে ওঠা চর বিজয়ে মাছ ধরার জন্য পেতে রাখা জালে আটকা পড়ে মারা যাচ্ছে গাঙচিলসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। জেলেদের অসচেতনতায় এভাবে পাখি মরার কারণে জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ছে। এতে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন পরিবেশকর্মীরা।খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কুয়াকাটা সৈকত থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে-পূর্ব সাগরের বুকে জেগে ওঠে একটি চর।

পাঁচ হাজার একর আয়তনের এ চরের অধিকাংশ এলাকা বর্ষা মৌসুমে পানিতে ডুবে থাকলেও শীত মৌসুমে জেগে ওঠে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে পর্যটক ও পর্যটন কর্মীরা চরটিতে আসেন এবং নাম দেন ‘চর বিজয়’।চর বিজয়ে অস্থায়ী ঘর তৈরি করে একটি মহল শীত মৌসুমে জাল পেতে মাছ ধরে। এ কারণে গাঙচিল, চ্যাগা, বালি হাঁসসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি ওই জালে আটকা পড়ে মারা যাচ্ছে। এবার শীত মৌসুমের শুরুতেই চরটিতে জেলেদের উপস্থিতি বেড়েছে। জেলেরা চরের চারপাশে জাল পেতে মাছ শিকার করছেন।কয়েকজন পর্যটক চর বিজয় থেকে ফিরে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

তাদের মধ্যে আরিফুর রহমান নামে এক পর্যটক জানান, চরে পেতে রাখা জালে দেখলাম মরা গাঙচিল আটকে আছে। কিছু মরা পাখি পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। মনে হচ্ছে ওই জালের কারণেই পাখিগুলো মারা গেছ।কুয়াকাটা ট্যুর গাইড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কেএম বাচ্চু বলেন, বিশেষ করে ডিসেম্বর থেকেই চার-পাঁচ মাস অতিথি পাখিগুলো চর বিজয়ে অবাধে বিচরণ করে। এরা ঝাঁকে ঝাঁকে ঘুরে বেড়ায়। কিন্তু এ চরে বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের জাল দিয়ে মাছ ধরা হচ্ছে। তাতে একদিকে পাখি মারা যাচ্ছে অন্যদিকে অবৈধ জাল দিয়ে ছোট মাছগুলো মারা হচ্ছে।বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) কলাপাড়া জোনের সাধারণ সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন মাননু বলেন, ওই চরটি আসলে একদিকে পাখিদের অভয়াশ্রম অন্যদিকে মাছের প্রজনন এলাকা বলা যেতে পারে।

বর্তমানে যেভাবে পাখিগুলো মারা যাচ্ছে এটা আমাদের জন্য বড় ক্ষতি। এটা যত দ্রুত সম্ভব বন্ধ করা দরকার।পটুয়াখালী বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, আমাদের একটি টিমকে দু-তিনদিন পর পর ওখানে পাঠানো হয়। আগামী এক মাসের মধ্যে চর বিজয়ের কিছু অংশে আমরা বনায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এরপর থেকেই আমাদের বন বিভাগের লোক ওখানে থাকবে। ফলে আর কেউ পাখি মারতে পারবে না।কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদুল হক বলেন, বিষয়টি আমি জানি। এরই মধ্যে মৎস্য কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাতে ওখানের জালগুলোকে উঠিয়ে নিয়ে আসা হয়। কতদূর করা হয়েছে আমি খোঁজ নিচ্ছি।

আপনার মতামত লিখুন :