ভাণ্ডারিয়ায় অসময়ের বৃষ্টিতে আমন ফসলের ক্ষতির শঙ্কা
পিরোজপুর প্রতিনিধিঃ পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ায় গত তিন দিন ধরে থেমে থেমে কখোনো গুড়ি গুড়ি আবার কখোনো মাঝারি এবং ভারী বৃষ্টির ফলে বেশি বিপাকে পড়েছে শ্রমজীবী মানুষ। দেখা মেলেনি সূর্যের। আর বৃষ্টির কারণে কর্মহীন হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। একদিকে অতিমারি করোনার প্রভাব কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আবার করোনা সাদৃশ্য ওমিক্রনের সংবাদে জনজীবন এমনিতেই হুমকির মুখে তার উপর ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের ফলে বৃষ্টির সঙ্গে দমকা বাতাসের কারণে চলতি আমন মৌসুমে আমন খেতের ধানগাছগুলো হেলে পড়েছে।
বৈরী আবহাওয়ার কারণে উপজেলার আমন ধানের ক্ষেত ছাড়াও মৌসুমী রবি শস্য খেসারি ডালের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা।রিকশার যাত্রী আঃ মালেক হাওলাদার জানান, বৃষ্টির কারনে রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা খুবই কম। রিক্সা ভাড়া দ্বিগুনেরও বেশি। একটু কিছু হলেই সবাই ভাড়া বেড়ে যায়, আমরা সাধারণ মানুষই সব সময়ই বিপদে থাকি।গতকাল সোমবা থেমে থেমে বৃষ্টির মধ্যেও দিনভর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ঘুরে দেখা যায়, তিন দিনের টানা বৃষ্টি ও দমকা বাতাসে আমন ধানগাছগুলো মাটিতে নুয়ে পড়েছে। নুয়ে পড়া গাছগুলোর নিচেই বৃষ্টির পানি জমে আছে। এ ছাড়া বৃষ্টিতে রবি শস্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শিয়ালকাঠী গ্রামের কৃষক মনির গাজী জানান, ‘বৃষ্টিতে অনেক ধান হেলে পড়েছে। অধিকাংশ ধান নষ্ট হয়ে যাবে এবং রবিশষ্যের ব্যপক ক্ষতি হয়েছে।
আমরা কৃষি কাজ করে লোকসানে আছি। তবে এবার আমনের ধান দেখে লোকসানের কথা ভুলে গিয়েছিলাম। ঝড়বৃষ্টির কারনে চাষাবাদের খরচের ধারদেনা কাটিয়ে লাভের মুখ দেখা যাবে না।বর্গাচাষি রফিকুল ইসলাম বলেন, ২০ শতক জমিতে খেসারী, করোল্লা ও ঢেঁড়শসহ বিভিন্ন বীজ কিনে চাষ করেছিলাম। বৃষ্টিতে সম্পূর্ণ ক্ষেত পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে গেছে।উপজেলা কৃষি অফিসের সূত্রে জানাগেছে, এ বছর পৌর সভাসহ উপজেলার বাকি পাঁচ ইউনিয়নে ৯হাজার ৪শত হেক্টর জমিতে আমন ধান, প্রায় ৪শত হেক্টর রবি শস্য এবং ২হাজার ৫০হেক্টর জমিতে খেসারী চাষ করা হয়েছে। আবাদ করা রবি শস্য অসময়ে বৃষ্টির কারণে প্রায় ৫০ ভাগ নষ্ট হয়ে গেছে।এবিষয়ে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, দমকা হাওয়ার কারণে আমন ধানগাছ মাটিতে নুয়ে পড়লেও তেমন কোনো ক্ষতির আশঙ্কা নেই। তবে বৃষ্টির পানি জমে থাকার কারণে ডালের আবাদ নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। পানি নেমে গেলে প্রকৃত ক্ষতির পরিমাণ জানাযাবে। আমরা উপ-সহকারী কর্মকর্তাদের সবসময় কৃষকদের সাথে যোগাযোগের নির্দেশ দিয়েছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক সীমা রানী ধর জানান,আমন ধানতো প্রায় পাকার পর্যায়। সম্পূর্ণ না পাকলে কাটার নির্দেশণাও দেয়া যায়না। তবে রবি মৌসুমে যে সকল চাষীরা সবজী চাষের উদ্যোগে নিয়েছেন তাদের আর কয়েকটা দিন পরে তা চাষের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।