কুয়াকাটায় শুঁটকি পল্লীর ব্যস্ততা বাড়ছে

NEWSNEWS
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  04:17 AM, 06 December 2021

কুয়াকাটা প্রতিনিধিঃ দিন যত বাড়ছে আহারের তালিকায় ততই যুক্ত হচ্ছে শুঁটকি। শুধু দেশেই নয়, বিদেশেও বেড়েছে এর চাহিদা। ফলে বাড়াতে হচ্ছে সরবরাহ। তাই পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় কেমিক্যালমুক্ত শুঁটকি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কয়েকশ শ্রমিক।জেলার দুটি বড় মৎস্য ঘাট কলাপাড়া উপজেলার আলীপুর-মহিপুর। এ দুই ঘাট থেকে মাছ সংগ্রহ করে কুয়াকাটার শুঁটকি পল্লীগুলোতে নিয়ে যান জেলেরা। মহিপুর, আলিপুর, লেবুর চর, গঙ্গামতির চর, গোড়াখালসহ বিভিন্ন চরে মাছের শুঁটকি প্রস্তুত করা হয়। লইট্ট্যা, ফাইস্যা, ছুরি, ছোট চিংড়ি, ছোট পোয়া, রইস্যা, রূপচাঁদা, লাক্ষাসহ প্রায় ৩৫ জাতের মাছ শুঁটকি করা হয় এসব পল্লীতে।নভেম্বর মাস থেকে প্রায় সাড়ে চারমাস চলে শুঁটকির ব্যবসা। কেমিক্যাল মুক্ত ও পরিচ্ছন্নতার সঙ্গে শুঁটকি তৈরি করায় এর চাহিদাও অনেক।

প্রতিবছর কয়েক কোটি টাকার শুঁটকি বিক্রি হয় কুয়াকাটা থেকে।কুয়াকাটা শুঁটকি পল্লীর ব্যবসায়ী আ. মালেক মূর্ধা বলেন, জেলেদের কাছ থেকে মাছগুলোকে কিনে নিয়ে আসার পরে বাছাই করে আলাদা করা, ময়লা ছাড়ানো, কিছু মাছে লবণ দেওয়া, কেটে মাছগুলো শুকাতে দেওয়া হয়। এভাবেই চলে আমাদের শুঁটকির কার্যক্রম।আরেক ব্যবসায়ী শাহজাহান বলেন, আমরা মাচায় করে মাছ রোদে শুকিয়ে বাজারজাত করার উপযুক্ত করি। পরবর্তীতে বস্তা করে দেশের বিভিন্ন জায়গা পাঠাই। আমরা সম্পূর্ণ কেমিক্যাল ও বিষমুক্ত শুঁটকি সরবরাহ করি।দিনমজুর হিসেবে কাজ করা রেহেনা বলেন, প্রতিদিন সকালে আসি আমরা, মাছ শুঁকানো, উল্টানো, প্যাকিং করাসহ বিকেল পর্যন্ত কাজ করি। আমাদের জনপ্রতি ৩৫০ টাকা করে দেয়, পুরুষ, নারী ও বাচ্চারাও কাজ করে এখানে। পুরো মৌসুমেই আমরা এখানে কাজ করি।পর্যটক সোহাগ হাফিজ বলেন, আমরা শুঁটকি পল্লীতে ঘুরতে এসে এখান থেকে শুঁটকি কিনলাম।

ভালো লাগলো যে ভালো শুঁটকি নিতে পারলাম। মার্কেটের তুলনায় এখানে দামও কম।কুয়াকাটা শুঁটকি মার্কেট সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক সোহেল মাহমুদবলেন, এখানে সাড়ে চার মাস শুঁটকি তৈরি করা হয়। এরপর প্যাকেজিং করে মার্কেটগুলোতে সরবরাহ করা হয়। কুয়াকাটায় পর্যটকদের আগমন ও শুঁটকির চাহিদা থাকে সারাবছর।তিনি আরও বলেন, পর্যটকদের জন্য আমরা বিশেষভাবে সুস্বাদু, স্বাস্থ্য সম্মত, বিষমুক্ত শুটকির ব্যবস্থা করার চেষ্টা করি। যাতে কোনো ধরনের বিষের ব্যবহার বা অস্বাস্থ্যকর শুঁটকি কেউ তৈরি না করে সে ব্যাপারে আমাদের যথেষ্ট তদারকি আছে।এ ব্যাপারে পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্লাহ বলেন, কুয়াকাটায় যারা মাছ শুঁটকি করে থাকে তারা বেশ ভালো অভিজ্ঞ এবং ভালো শুঁটকি বাজারজাত করে। প্রতিবছর প্রায় ৭০ থেকে ৮০ টন শুঁটকি এ উপজেলা থেকে উৎপাদন হয়ে থাকে। শুঁটকি প্রস্তুতকারীদের একটি স্থায়ী জায়গায় দেওয়া এবং আরও উন্নতমানের শুঁটকি তৈরিতে ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা অনেক বড় ধরনের কাজ, এরপরও আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি, আসা করছি শিগগির একটা ব্যবস্থা করতে পারবো

আপনার মতামত লিখুন :