পিরোজপুরে লোকালয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে মুখপোড়া দুটি হনুমান
পিরোজপুর প্রতিনিধিঃ পিরোজপুর শহরে ঘুরে বেড়াচ্ছে দলছুট দুটি মুখপোড়া বা কালোমুখো হনুমান। শহরের বড় গাছে, বাড়ির সীমানাপ্রাচীরের ওপরে ও ঘরের চালে হনুমান দুটিকে একসঙ্গে দেখা যায়। হনুমান দুটি যেখানে যাচ্ছে কৌতূহলী এলাকাবাসী ভিড় করছে। দিচ্ছে ফলসহ নানান খাবার। শুক্রবার সকালে পিরোজপুর শহরের রাজারহাট মহল্লায় হনুমান দুটিকে দেখা যায়।কেউ বিরক্ত করলে মুখে ভেংচি কেটে ভয় দেখায় হনুমান। শহরের সিআইপাড়া, শিকারপুর ও হুলারহাট স্টিমারঘাট এলাকায় প্রায়ই হনুমানের দেখা মেলে। মূলত যশোরের কেশবপুর থেকে কলা ও সবজিবোঝাই ট্রাকে ওঠে দলছুট হয়ে পিরোজপুরে চলে এসেছে এসব হনুমান।
পিরোজপুর শহরের রাজারহাট মহল্লার দোকানদার আলী আজম বলেন,রাজারহাটের জেলা পরিষদের ডাকবাংলোর সীমানাপ্রাচীরের ওপর সম্প্রতি দুটি পুরুষ হনুমান প্রায়ই দেখা যাচ্ছে। স্থানীয় লোকজনের দেওয়া খাবার খেতে মূলত এরা এখানে আসে। এক বছর ধরে একটি হনুমান রাজারহাট মহল্লায় মাঝেমধ্যে ঘোরাঘুরি করত। এক মাস ধরে হনুমানটির সঙ্গে আরও একটি হনুমান এখানে আসা শুরু করে।মঠবাড়িয়া উপজেলা সদরে কয়েক দিন ধরে একটি হনুমানকে বিভিন্ন স্থানে ছোটাছুটি করতে দেখা গেছে। স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, যশোর থেকে আসা ফল ও সবজির ট্রাকে খাবারের জন্য ওঠা হনুমান দলছুট হয়ে পড়ে। দলছুট হনুমান ট্রাকে লোকালয়ে চলে আসে। লোকালয়ে আসা এসব হনুমান গাছের উঁচু ডালে আশ্রয় নেয়।আবার গাছ থেকে নেমে খাবারের জন্য ছোটাছুটি করে।
উৎসুক মানুষ এদের কলা, পাউরুটি, বিস্কুটসহ নানান খাবার খেতে দেয়। পিরোজপুর সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান এম এ আউয়াল ফেরদৌস বলেন,হনুমান দলবদ্ধ হয়ে বসবাস করে। যশোরের কেশবপুর এলাকায় মুখপোড়া হনুমান দেখা যায়। এরা বৃক্ষচারী শান্তিপ্রিয় প্রাণী। চলাফেরা, ঘুম, খাবার সংগ্রহ, প্রজনন, খেলাধুলা, বিশ্রাম—সবকিছু এরা গাছে সম্পন্ন করে। মূলত গাছের পাতা খেয়ে জীবন ধারণ করে বলে এদের পাতা বানরও বলা হয়।বনভূমি হ্রাস পাওয়ায় এরা অস্তিত্বের সংকটে পড়েছে। পাশাপাশি দলছুট হয়ে পড়ায় এদের বংশবৃদ্ধিও হ্রাস পাচ্ছে। বাংলাদেশে এরা বিপন্ন। পিরোজপুর জেলা বন কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, দলছুট হয়ে লোকালয়ে আসা হনুমানকে এলাকাবাসী যেন কোনো ক্ষতি বা বিরক্ত না করেন, সে বিষয়ে সবার সচেতনতা দরকার।যদি লোকালয়ে হনুমানের জীবন বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তবে এটি বনাঞ্চলে ছেড়ে দেওয়ার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হবে। পিরোজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বশির আহমেদ বলেন, মুখপোড়া হনুমান শহরে আসার খবর পেয়েছেন। এ বিষয়ে খোঁজখবর রাখার জন্য বন বিভাগকে অবহিত করা হবে।