বরিশাল নগরীকে কঠোর নিরাপত্তায় রেখেছে মেট্রোপলিটন পুলিশ

NEWSNEWS
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  02:19 AM, 24 November 2021

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ অত্যাধুনিক ক্যামেরা স্থাপন করে বরিশাল নগরীকে কঠোর নিরাপত্তার চাদরে আবৃত্ত করে রেখেছে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ।এ লক্ষ্যে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ ২২৫টি পয়েন্টে সিসিটিভি ক্যামেরা, ৮টি প্রবেশমুখে ফেস ডিটেকশন এবং গুরুত্বপূর্ণ ৩টি স্থানে স্থাপন করা হয়েছে ৩৬০ ডিগ্রি এ্যাংগেলের পিটিজেড ক্যামেরা। এসব ক্যামেরা স্থাপনের ফলে নগরবাসীর নিরাপত্তা বাড়ার পাশাপাশি অপরাধ নিয়ন্ত্রণ এবং অপরাধী শনাক্ত করা সহজ হবে।কোন চিহ্নিত অপরাধী ৮টি প্রবেশদ্বার দিয়ে নগরীতে প্রবেশ করলে ফেস ডিটেকশনের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংকেত পাবে পুলিশ।

তাৎক্ষনিক তাকে আটকের ব্যবস্থা নেবে সংলগ্ন পুলিশ স্টেশন।আগামীতে মহানগরীতে আরও ৫শটি ক্যামেরা স্থাপন করে পুরো মেট্রোপলিটন এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানোর কথা বলেছেন মেট্রো পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান।৪৩০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের বরিশাল মেট্রোপলিটন এলাকার মধ্যে প্রথম পর্যায়ে নগরীর ৫৪ কিলোমিটার এলাকার বিভিন্ন স্থানে স্থাপন করা হয়েছে অত্যাধুনিক ২২৫টি সিটি ক্যামেরা।দুটি বাস টার্মিনাল এবং নদী বন্দর এলাকায় স্থাপন করা হয়েছে ৩৬০ ডিগ্রি এ্যাংগেলের ৩টি পিটিজেড ক্যামেরা। সন্দেহজনক কিছু দৃষ্টিগোচর হলে কন্ট্রোল সেন্টার থেকে এই ক্যামেরা ৩৬০ ডিগ্রি পর্যন্ত ঘুরিয়ে বিষয়টি গভীরভাবে নজরদারি করতে পারবে সংশ্লিষ্টরা।এছাড়া নগরীর ৮টি প্রবেশদ্বারে স্থাপন করা হয়েছে ৮টি ফেস ডিটেকশন ক্যামেরা।

চিহ্নিত অপরাধী কিংবা সাজাপ্রাপ্ত কোন পলাতক আসামি ৮টি প্রবেশদ্বার দিয়ে নগরীতে প্রবেশের সাথে সাথে ফেস ডিটেকশন ক্যামেরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংকেত দেবে। তাৎক্ষনিক সংলগ্ন থানা পুলিশ ওই অপরাধীকে গ্রেফতার করতে পারবে।এ সব কার্যক্রম সার্বক্ষনিকভাবে নজরদারির জন্য মেট্রোপলিটনে গঠন করা হয়েছে আলাদা একটি ‘কমান্ড এন্ড কন্ট্রোল সেন্টার’। মেট্রোপলিটনের ক্রাইম অপারেশন এন্ড প্রসিকিউশন শাখার অধীনে কমান্ড এন্ড কন্ট্রোল সেন্টার কাজ করছে। একজন উপ-কমিশনার এই ইউনিটের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে।এছাড়া অতিরিক্ত উপ-কমিশনার, সহকারী কমিশনার ও পরিদর্শকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা কন্ট্রোল সেন্টার নজরদারি করছেন। সার্বক্ষনিক নজরদারিতে রয়েছেন পুলিশের ৯ জন প্রশিক্ষিত সদস্য।প্রায় ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে স্থাপিত সিসি ক্যামেরাসহ কমান্ড এন্ড কন্ট্রোল সেন্টার পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয় গত ২৭ জুন। তবে গত ১৭ নভেম্বর কমান্ড কন্ট্রোল সেন্টারের উদ্বোধন করেন পুরিশ মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ।কন্ট্রোল সেন্টারের মনিটরিং কর্মী মো. ওসমান গনী ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মী অজিত হালদার বলেন, সব কাজ সুচারুরূপে চলছে। কিন্তু ইন্টারনেটের গতি কমে গেলে মাঝে মধ্যে নজরদারিতে বিভ্রাট ঘটে।বিএমপির ক্রাইম অপারেশন এন্ড প্রসিকিউশন শাখার অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. রাসেল জানান, প্রশিক্ষনপ্রাপ্তদের দিয়ে গঠন করা হয়েছে কমান্ড এন্ড কন্ট্রোল সেন্টার।কোথাও কোন অপরাধ সংঘটিত কিংবা অবৈধ জনসমাগম হলে সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে জানতে পারবে কন্ট্রোল সেন্টার। তাৎক্ষনিকভাবে ওই বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পারবে সংশ্লিস্ট থানা পুলিশ।

এছাড়া অপরাধী শনাক্তেও প্রবেশ পথগুলোতে স্থাপন করা ফেস ডিটেকটর গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখবে। এর ফলে নগরীরবাসীর নিরাপত্তা বৃদ্ধি ও অপরাধ নিয়ন্ত্রন এবং অপরাধী শনাক্তকরন সহজ হবে বলে মনে করেন অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. রাসেল।বিএমপির কোতয়ালী থানার সদ্য বিদায়ী ওসি মো. নুরুল ইসলাম জানান, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ইতিমধ্যে ছিনতাই নাটকের রহস্য উন্মোচন, চুরি, ছিনতাইসহ অর্ধ শতাধিক অপরাধের রহস্য উন্মোচন করা হয়েছে। থানা পর্যায়ে সেবা প্রার্থীরা কোন দুর্ভোগে পড়লে কন্ট্রোল সেন্টার থেকে দেখতে পারবেন কর্মকর্তারা।বরিশাল মহানগরীকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দিতে শিঘ্রই আরও ৫শ স্থানকে আধুনিক প্রযুক্তির আওতায় আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান। নগরবাসী ইতিমধ্যে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের সুফল পেতে শুরু করেছে বলে জানান পুলিশ কমিশনার।বিএমপির এই কমান্ড এন্ড কন্ট্রোল সেন্টার স্থাপনে কারিগরি সহায়তা দিয়েছে সিডনিসান ইন্টারন্যাশনাল এবং নেটওয়ার্ক সহায়তা দিয়েছে ইউরোটেল বিডি নামে একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠান।

আপনার মতামত লিখুন :