আমতলীর এসিল্যান্ডের বিরুদ্ধে নারী স্টাফকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ

NEWSNEWS
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  11:33 PM, 07 November 2021

আমতলীর এসিল্যান্ডের বিরুদ্ধে নারী স্টাফকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ
ভুক্তভোগী নারী এ ঘটনার বিচার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। – ছবি:
বরগুনার আমতলী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত ইউএনও মো. নাজমুল ইসলামের বিরুদ্ধে এক নারী স্টাফকে ধর্ষণ চেষ্টা ও যৌন হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী নারী এ ঘটনার বিচার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগে বলা হয়, ভুক্তভোগীর স্বামী আমতলী উপজেলা পরিষদে মজুরি ভিত্তিক নিয়োগ পেয়ে ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। ৭ বছর পূর্বে তিনি মারা যাওয়ার পরে সংসারের অভাব অনটনের কথা ভেবে ভুক্তভোগী ওই নারী স্বামীর রেখে যাওয়া মজুরি ভিত্তিক চাকরি করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেন। ৬ বছর পূর্বে উপজেলা পরিষদে ওই নারীকে মজুরি ভিত্তিক পদে নিয়োগ দেয়া হয়। এত দিন তিনি ভালোভাবেই চাকরি করে আসছেন।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নাজমুল ইসলাম আমতলীতে ৬ মাস আগে যোগদান করেন। তিনি ভারপ্রাপ্ত ইউএনওর দায়িত্বে থাকা অবস্থায় ভুক্তভোগী ওই নারী স্টাফকে কারণে অকারণে তার অফিস কক্ষে ডেকে নিয়ে যৌন হয়রানি ও কুপ্রস্তাব দেন। এতে তিনি রাজি না হওয়ায় মাঝে মধ্যে ওই নারী স্টাফের স্পর্শকাতর স্থানে স্পর্শ করে বিভিন্ন সময় যৌন হয়রানি করেন মো. নাজমুল ইসলাম। ওই নারীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নম্বর সংগ্রহ করে দিনে ও রাতে কল করে বিরক্ত করতে থাকেন তিনি। এসব ঘটনা ভুক্তভোগী ওই নারী স্টাফ অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অবগত করেন। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নাজমুল ইসলাম ভুক্তভোগী ওই নারী স্টাফকে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা পরিষদের কয়েকজন স্টাফ জানান, মজুরি ভিত্তিক (মাস্টার রোল) নিয়োগ পাওয়া ওই নারী স্টাফের সাথে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) স্যার প্রকাশ্যে ওই ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে। যা আমাদের স্টাফ ও পরিষদে সেবা নিতে আসা অনেকেই প্রত্যক্ষ করেছে।

উপজেলা পরিষদে সেবা নিতে আসা কবির মালাকারসহ বেশ কয়েকজন জানান, আমরা উপজেলা নির্বাচন অফিসে কাজ শেষ করে যাওয়ার সময় উক্ত ঘটনা প্রত্যক্ষ করি।

ভুক্তভোগী ওই নারী স্টাফ বলেন, এসিল্যান্ড স্যার প্রায়ই ইউএনও স্যারের রুমে ডেকে আমাকে কুপ্রস্তাব দিত এবং আমার শরীর স্পর্শ করত। বিষয়টি আমি আ. সালাম স্যার ও মঞ্জু স্যারকে জানিয়েছি। এরপর গত বৃহস্পতিবার তিনি প্রকাশ্যে আমাকে জড়িয়ে ধরে হয়রানি করেন ও ধর্ষণ চেষ্টা চালায়। আমি চিৎকার দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যেতে গেলে তিনি আমার কাপড় ধরে টান দেন, এতে আমার কাপড় অর্ধেকেরও বেশি খুলে যায়। আমি এ ঘটনার বিচার চেয়ে নির্বাহী অফিসার স্যারের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছি। তিনি আমাকে এখন বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, এটা আমার বিরুদ্ধে একটা ষড়যন্ত্র। আমাকে হেয় করতে ছোট্ট একটি ঘটনাকে অনেক বড় আকারে বিস্তার ঘটানো হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম আব্দল্লাহ বিন রশিদ মোবাইল ফোনে বলেন, বিষয়টি তিনি জেনেছেন। বর্তমানে তিনি ছুটিতে ঢাকায় অবস্থান করছেন।

বরগুনা জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, তিনিও বিষয়টি শুনেছেন। প্রকৃত ঘটনা জেনে তদন্ত করে সত্যতা পেলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপনার মতামত লিখুন :