বাকেরগঞ্জের উপজেলা পরিষদ চত্বরের ১১৬টি আমগাছ কেটে সাবাড়
নিজস্ব প্রতিবেদকঃবরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্বরের আমবাগানের ১১৬টি আমগাছ কেটে সাবাড় করা হয়েছে। সেখানে নতুন ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে উপজেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ। শুক্র ও শনিবার ছুটির দিনের সুযোগ নিয়ে এসব গাছ কাটা হয়।স্থানীয় ব্যক্তিরা বলছেন, শুক্র ও শনিবার ছুটির দিন থাকায় উপজেলা পরিষদে লোকজনের আনাগোনা কম ছিল। এই সুযোগে দুই দিনে গাছগুলো কেটে সাবাড় করা হয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় চাপা ক্ষোভ থাকলেও প্রকাশ্যে কেউ প্রতিক্রিয়া জানাতে সাহস পাচ্ছেন না।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) বরিশাল বিভাগীয় সমন্বয়কারী রফিকুল আলম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিশ্বব্যাপী যখন গ্রিনহাউস গ্যাসের মাত্রা কমানো নিয়ে উদ্যোগের বিষয়ে জোর আলোচনা চলছে।চলতি শতকের শেষে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের হার পরিকল্পিত দেড় ডিগ্রির জায়গায় ২ দশমিক ৭ ডিগ্রিতে দাঁড়ানো নিয়ে বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা নিয়ে জলবায়ু সম্মেলন বা কপ-২৬ সম্মেলন শুরু হয়েছে। সেই মুহূর্তে এ ধরনের উদ্যোগ আত্মঘাতী।বরিশাল জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, বরিশালের তৎকালীন জেলা প্রশাসক শহীদুল আলম সাত বছর আগে প্রায় আড়াই শ আম গাছ রোপণ করে এই বাগান গড়ে তোলেন। স্থানীয়ভাবে বাগানটি ডিসি বাগান নামে পরিচিত ছিল। বাকেরগঞ্জ ছাড়াও জেলার প্রতিটি উপজেলা পরিষদ চত্বরে তিনি এই বাগান করেছিলেন।উপজেলা পরিষদ সূত্র জানায়, সম্প্রতি উপজেলা পরিষদ চত্বরে নতুন একটি চারতলা ভবন নির্মাণ করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়। আমবাগানের জমিতে এই ভবন নির্মাণের জন্য স্থান নির্ধারণ করা হয়।এর অংশ হিসেবেই শুক্র ও শনিবার শ্রমিক নিয়োগ করে ১১৬টি আমগাছ কাটা হয়। এরপর দ্রুত এসব গাছ ও ডালপালা পরিষ্কার করা হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েক ব্যক্তি জানান, উপজেলা পরিষদের ভবনটির পেছনে নতুন ভবন নির্মাণ করা হলে সুন্দর এই আমবাগান রক্ষা পেত।বন বিভাগের স্থানীয় কর্মকর্তারা জানান, বন আইন অনুযায়ী, কোনো বৃক্ষ কর্তনের জন্য বন বিভাগের অনুমতি নেওয়ার বাধ্যবাধকতা আছে। কিন্তু বাগানটির গাছ কাটার জন্য বন বিভাগেরও কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি।উপজেলা বন কর্মকর্তা মহিদুর রহমান বলেন, ‘গাছ কাটার জন্য বন বিভাগের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন থাকলেও আমাদের কাছে কেউ অনুমতি চায়নি।আমবাগান কাটার বিষয়ে বাকেরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সামসুল আলম বলেন, উপজেলা পরিষদের সামনে এই বাগান করায় পরিষদের ভবনটি বাগানের আড়ালে পড়ে গেছে। এটা জঙ্গল হয়ে গিয়েছিল।
তাই এটা রাখার যৌক্তিকতা নেই। বন বিভাগের অনুমতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বন বিভাগের অনুমতির জন্য আবেদন করা হলে চার-পাঁচ বছরেও এই অনুমতি পাওয়া যেত না। তা ছাড়া এসব গাছে যে আম হয়, তা ভালো জাতের নয়। পরবর্তী সময়ে আমরা ভালো জাতের আমগাছ লাগাব। আর এটা উপজেলা পরিষদের প্রয়োজনের জন্যই সিদ্ধান্ত নিয়ে করা হয়েছে।বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাধবী রায় বলেন, ‘আমগাছ কাটার সময় আমি কর্মস্থলে ছিলাম না। দুই দিন ছুটিতে ছিলাম। সেই সময়ে এগুলো কাটা হয়েছে।