বিষখালী নদীতে ফেরি অনুমোদনে দুই পারে আনন্দের বন্যা

বেতাগী প্রতিনিধিঃ উপকূলীয় জনপদ বরগুনার বেতাগী উপজেলার বিষখালী নদীর দুই পারের মানুষের মাঝে আনন্দের বন্যা বইছে। ফেরির দাবিতে তাদের দীর্ঘ দুই যুগের আন্দোলনের ফল হিসেবে ফেরি অনুমোদন দিয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়।এ খবর পাওয়ার পরপরই বিষখালী নদীর পূর্বপার বরগুনার বেতাগী উপজেলা এবং পশ্চিমপাড় ঝালকাঠীর কাঁঠালিয়া উপজেলার মানুষের মধ্যে আনন্দের জোয়ার শুরু হয়।
জানা গেছে, বেতাগী উপজেলার পটুয়াখালী-মির্জাগঞ্জ-বেতাগী-কচুয়া মহাসড়কে বিষখালী নদীতে বেতাগী-কচুয়া ফেরি স্থাপনের জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সড়ক পরিবহন মহাসড়ক বিভাগ সোমবার (১ নভেম্বর) উপসচিব ফাহমিদা হক খান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই অনুমোদনের বিষয়টি নিশ্চিত করে।সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ৬ অক্টোবর সকাল ১০টায় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সড়ক পরিবহন মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আব্দুল মালেকের সভাপতিত্বে টেকনিক্যাল কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিষখালী নদীতে বেতাগী-কচুয়া ফেরি স্থাপনের জন্য নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। এর আগে ৪ অক্টোবর এ সংক্রান্ত সভা আহ্বান করেন এ বিভাগের উপসচিব ফাহমিদা হক খান। এরপর বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমন, ঝালকাঠী-১ আসনের সংসদ সদস্য বজলুল হক হারুন, বেতাগী পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব এ বি এম গোলাম কবির ও শৌলজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মাহমুদ হোসেন রিপনের প্রচেষ্টায় পটুয়াখালী-মির্জাগঞ্জ-বেতাগী-কচুয়া মহাসড়কের বেতাগী-কচুয়া পয়েন্টে বিষখালী নদীতে ফেরি অনুমোদনের কার্যক্রম শুরু হয়।
সূত্র আরো জানায়, প্রশাসনিক অনুমোদনের আগে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিরহন কর্তৃপক্ষ থেকে বিষখালী নদীর গভীরতা নিরুপণের কাজ সম্পন্ন করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করেন।বেতাগী-কচুয়া পয়েন্টে বিষখালী নদীর গভীরতা নিরুপণের জন্য সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ফেরি প্লানিং সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস গত ২৬ আগস্ট বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিরহন কর্তৃপক্ষের হাইড্রোগ্রাফি বিভাগের পরিচালক বরাবর চিঠি পাঠান।এদিকে, ২০১৫ সালে ডিসেম্বর মাসে বেতাগী-কচুয়া ফেরি কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১৬ সালের ১৩ জানুয়ারি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগরে নন-গেজেটেড সংস্থাপন এনটিআর অধিশাখার উপ-সচিব মোহাম্মাদ রফিকুল করিম সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী বরাবর মতামতসহ প্রয়োজনীয় তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠান। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের তৎকালীন প্রধান প্রকৌশলী ইবনে আলম হাসান ২০১৮ সালের ২৮ আগস্ট ওই চিঠির ইতিবাচক জবাব দিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য দেন।পরে ৬ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখ বিষখালী নদীর ওপর বেতাগী-কচুয়া পয়েন্টে ফেরি চালুর সম্ভব্যতা যাচাই প্রতিবেদন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের তৎকালীন প্রধান প্রকৌশলী ইবনে আলম হাসান স্বাক্ষরিত চিঠি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।
সেইসঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণের জন্য ঢাকার সড়ক ভবনের ফেরি প্লানিং সার্কেলসহ সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়।কাঁঠালিয়া উপজেলার শৌলজালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. মাহমুদ হোসেন রিপন বলেন, ‘২০১৪ সাল থেকে বিষখালী নদীতে বেতাগী-কচুয়া পয়েন্টে স্থাপনে ন্যায়সংগত দাবি করে আসছি। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে একাধিকবার চিঠি পাঠিয়েছি। আজ তা বাস্তবে রূপ নিয়েছে।’বেতাগী পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব এ বি এম গোলাম কবির বলেন, ‘বেতাগীবাসীর প্রাণের দাবি ছিল বিষখালী নদীর বেতাগী-কচুয়া পয়েন্টে ফেরি স্থাপন। ফেরি স্থাপনে প্রশাসনিক অনুমোদন উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় যোগাযোগ ব্যবস্থায় এ জনপদ আরেক ধাপ এগিয়ে যাচ্ছে।