যুবসমাজকে নিজের পায়ে দাড়াতে হবে: পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী

NEWSNEWS
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  12:29 AM, 25 October 2021

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীম-এমপি বলেছেন, আমি নেতাদের মতো সুন্দর বক্তব্য দিতে পারিনা, আমি কাজে বিশ্বাসী তাই কাজ করতে পছন্দ করি।আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে,একপ্রাপ্ত থেকে আরেক প্রান্তে ছুটে বেড়াই। কারণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে দুঃখী মানুষের পাশে দাড়ানোর। আর তার নির্দেশনা অনুযায়ী আমি পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি।রবিবার (২৪ অক্টোবর) বিকেলে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার ধুলিয়ায় তেতুলিয়া নদীর ভাঙ্গন হতে ধুলিয়া লঞ্চঘাট হতে বাকেরগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপাশা রক্ষা প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।এসময় প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ।

দেশের যেদিকে তাকাবেন সেদিকেই দেখবেন একতীর ভাঙ্গছে অন্যতীর গড়ছে। এটাই হলো বাংলাদেশের চিরচায়িত চিত্র। অতীতেও আমাদের বাবা-দাদারা নদীর ভাঙ্গন দেখে এসেছে, এখন আমরা দেখছি, ভবিষ্যতে নতুন প্রজন্মরা দেখবে। এটা বন্ধ করা যাবে না।কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ভাঙ্গনকে একটি সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে।অতীতের সরকারগুলো নদী ভাঙ্গন রোধে তেমন কোন ব্যবস্থা নিতে পারেনি।বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছাস হচ্ছে। এসব কারণে নদী ভাঙ্গন বেড়ে গিয়েছে।তারপরও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি নদী ভাঙ্গন রোধ করার জন্য।মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ডেল্টা প্লানের কারনে আজ আমরা বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে নিয়ে আসতে পেরেছি। ২০৩০ সালের ভেতরে আমরা উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা সমৃদ্ধশালী দেশে পৌছাবো।আজ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৪৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পায়রা নদীর ওপর “পায়রা সেতু”র উদ্বোধন করেছেন।

এরফলে বরিশাল থেকে পায়রা বন্দর ও সাগরকন্যা কুয়াকাটায় যেতে কোন বিঘ্নতার সৃষ্টি হবে না, ফেরির প্রয়োজন হবে না।কিন্তু একসময় ৫ থেকে ৭ টি ফেরি পার হতে হতো।শুধু এখানেই নয়, গোটা বাংলাদেশে যে উন্নয়ন হচ্ছে সেটা সম্ভব হয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য।পদ্মা সেতুর কাজ প্রায় শেষ পর্যায়। আগামী বছর মাঝামাঝি সময়ের ভেতরে পদ্মা সেতু দিয়ে যান চলাচল শুরু করবে এবং ট্রেন চলাচলও করবে।ইতিমধ্যে পায়রা বন্দর পর্যন্ত চারলেনের কাজ শুরু হয়েছে, রেললাইনও হবে। এগুলো সবকিছু হলে আমরা আর পিছিয়ে থাকবো না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে যখন সরকার গঠন হয় তখন দক্ষিনাঞ্চলের কিন্তু উন্নয়ন হয়।সেটার প্রমান আপনারা ইতিমধ্যে পেয়েছেনও ।পায়রা বন্দরের কারনে বরিশালের বিভিন্ন জায়গায় অফিস হবে, শিল্প কারখানা হবে।সুতরাং যুবসমাজের চাকুরির কর্মসংস্থান হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দক্ষিনাঞ্চলের মানুষকে যে সুবিধা দিচ্ছে তা যদি আপনারা ভোগ- উপভোগ করতে চান। তাহলে যুবসমাজকে নিজের পায়ে দাড়াতে হবে, লেখাপড়া করতে হবে, চরিত্রগতভাবে তাদেরকে ভালো করতে হবে এবং নতুন প্রজন্মকে ভালো শিক্ষা দিতে হবে।আপনার সন্তানকে যদি ভালো শিক্ষা দিতে পারেন তাহলে বরিশালে যখন উন্নয়নকাজগুলো হবে সেখানে আপনারা ছেলে-মেয়েরাই চাকুরি পাবে। আর যদি তাদের ভালোভাবে প্রস্তুত করতে না পারেন তাহলে অন্য জায়গার ছেলে-মেয়েরা এসে চাকুরি করবে।আমি পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী।

আমার মন্ত্রনালয়ে কিছুদিন আগে উপ সহকারী প্রকৌশলী পদে চাকুরি দেয়া হয়েছে। বরিশাল থেকে ৩৯ জন লোক আবেদন করেছিলো।লিখিত পরীক্ষায় ৩৯ জনের একজনও পাশ করেনি।তখন পাশ না করার কারন খুজতে গিয়ে দেখলাম কেউ শূণ্য পেয়েছে, কেউ ১ পেয়েছে, কেউ তিন পেয়েছে।আর সবথেকে যে ভালো করছে সে ১০ পাইছে।আপনারাই বলেন লিখিত পরীক্ষায় কেউ দশ পেলে তাকে কিভাবে আমি সিলেক্ট করবো।এজন্য অভিভাবক যারা পিতা, বড় ভাই রয়েছেন তাদের বলি আপনাদের সন্তান, ছোটভাইকে লেখাপড়া করান।লেখাপড়া না করলে চাকুরি দেয়া সম্ভব না।আমি পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী হয়ে আমার এলাকার ছেলেদের চাকুরি দিতে পারিনি এরথেকে বড় কষ্ট কি হতে পারে।বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা গড়ার সপ্ন দেখেছিলেন। সেই সপ্ন বাস্তবায়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কাজ করে যাচ্ছেন। তাই আজ বাংলাদেশ পৃথিবীর বুকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। এখন বাংলাদেশকে নিয়ে হাসেনা, বলে না তলাবিহীন ঝুড়ি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব নেতা হয়েছেন।তার সাথে অন্যান্য রাষ্ট্রপ্রধানরা যখন কথা বলেন, তখন হিসেব করে বলেন।বাংলাদেশ আজ পৃথিবীর বুকে একটা রোল মডেল হয়েছে।এজন্য আপনারাও কাজ করেছেন, আগের থেকে অনেক কর্মঠ হয়েছেন।সরকারের সাথে একসাথে কাজ করলে দেশ এগিয়ে যায়।

ধুলিয়া-দুর্গাপাশায় ৭১২ কোটি টাকার প্রকল্প পাশ হয়েছে।যেখানে সাড়ে ৭ কিলোমিটার নদী তীর রক্ষায় বাধ করা হবে এবং ড্রেজিং করা হবে। এটি হলে পরে তীর রক্ষার পাশাপাশি নদী শাসন হবে, যারমধ্য দিয়ে অতীতের নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে এ এলাকার মানুষ রক্ষা পাবে।১৫ টি প্যাকেজে এখানকার কাজ হবে জানিয়ে স্থানীয়দের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, কাজটি যাতে ভালোভাবে হয় সেদিকে আপনাদের খেয়াল রাখতে হবে, কারন এটি আপনাদের কাজ। প্রকৌশলীদের প্রতি কঠোর নির্দেশনা রয়েছে কাজ ভালোভাবে করার জন্য এবং কাজের মান ভালো হওয়ার জন্য।কেউ ডিস্টার্ব করবেন না, তবে চলমান কাজের দিকে নজর রাখবেন,যাতে করে কেউ অসাধু করার চেষ্টা করলে সেটি করতে না পারে।কেউ চেষ্টা করলে সেটি আপনাদের সংসদ সদস্য, অথবা আমাদের চিফ ইঞ্জিনিয়ারকে জানাবেন, যাতে করে কাজটি ভালোভাবে হয়। ভালোভাবে না হলে ধুলিয়া দুর্গাপাশায় ৭১২ কোটি টাকার আর একটি প্রকল্প দেয়া কিন্তু সম্ভব হবে না।স্থানীয় কিছু মানুষ অসাধু ব্যবসায়ীদের যোগসাজেশে নদীর তীর থেকে বালু উঠায়।

এরফলে যতো শক্তিশালী তীর রক্ষা বাধ আমরা করি না কেন তা টেকসই হবে না। এজন্য অসাধু উপায়ে নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ রাখতে হবে।আর ব্যবসায়ীদের প্রতি অনুরোধ আপনারা বালু মহল থেকে বালু উত্তোলন করেন, যেখান সেখানে বালু উত্তোলন করবেন না।সভার সভপতিত্ব করেন দক্ষিণাঞ্চল বাপাউবো বরিশালের প্রধান প্রকৌশলী মোঃনূরুল ইসলাম সরকার।সে-সময় উপস্থিত ছিলেন পটুয়াখালী-২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আ.স.ম ফিরোজ এমপি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) আবদুল হাফিজ মল্লিকসহ সামাজিক ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা।

আপনার মতামত লিখুন :