হানিফ সংকেত একজনই
হানিফ সংকেত। ‘ইত্যাদি’ ছাড়াও ব্যক্তি হানিফ সংকেত আমজনতার কাছে পরম আস্থার একটি নাম। আজ হানিফ সংকেতের জন্মদিন। ১৯৫৮ সালের ২৩ অক্টোবর বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বিশেষ এ দিনটিতে শুভ কামনায় ভাসছেন তিনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেসহ সব মাধ্যমেই ভক্ত ও শুভকাঙ্খীরা তাকে শুভ কামনা জানাচ্ছেন।
হানিফ সংকেত মানেই আজ দেশের ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানের প্রতিচ্ছবি। এ মানুষটিকে ছাড়া ম্যাগাজিন ইত্যাদির একটি দৃশ্যও কল্পনা করা মুশকিল। হয়তো অনেক দৃশ্যেই সশরীরে হানিফ সংকেত থাকেন না, কিন্তু নিয়মিত দর্শক ভালো করেই জানে, দৃশ্যটার নেপথ্যে আছে একটা পরিণত মস্তিষ্ক। সেই মস্তিষ্ক থেকেই বের হয় ছন্দোময় সব সংলাপ। দর্শক যতক্ষণ ‘ইত্যাদি’ দেখে, আদতে ততক্ষণ তারা হানিফ সংকেতকেই দেখে। এ কারণেই ‘ইত্যাদি’ আর হানিফ সংকেত একে অন্যের পরিপূরক। গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের টিভিতে কত ধরনের অনুষ্ঠান এল-গেল, ‘ইত্যাদি’ ঠিকই রয়ে গেল।
১৯৮৯ সালের মার্চে প্রচারিত হয় ‘ইত্যাদি’র প্রথম পর্ব। শুরুর দিকে প্রচারিত হতো মাসে দুইবার। বিটিভির প্যাকেজ যুগের প্রথম প্যাকেজ ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানও ‘ইত্যাদি’। ৩২ বছরে কত কিছুর বদল হলো- স্যাটেলাইট যুগ এলো, এলো ইউটিউব-ওটিটির যুগ। মুঠোফোনের কল্যাণে হাতের মুঠোয় বিনোদন দুনিয়া নিয়ে বসে আছে দর্শক, তবু ‘ইত্যাদি’র আবেদন এতটুকু কমেনি তাদের কাছে।
‘ইত্যাদি’র বাইরে হানিফ সংকেত একজন জনপ্রিয় রম্য লেখক। প্রতিবছর ঈদে টেলিভিশনের জন্য বানান নাটক। সেখানেও তিনি তুলে ধরেন সমাজের নানা অসংগতি। সব মিলিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে তিনি ‘আমাদের লোক’। সাধারণত জনপ্রিয় মানুষের শুভাকাক্সক্ষীর পাশাপাশি নিন্দুকও থাকে, কিন্তু হানিফ সংকেত এই দেশে একমাত্র ব্যতিক্রম, ‘ইত্যাদি’র মতো তারও কোনো নিন্দুক নেই।
সংস্কৃতিতে বিশেষ অবদানের জন্য হানিফ সংকেত পেয়েছেন
১৯৭৫ – আবুল হাসান স্মৃতি পুরস্কার
১৯৮২ – অগ্রণী ব্যাংক শিশুসাহিত্য পুরস্কার
১৯৮৭ – বাংলা একাডেমী পুরস্কার
২০০১ – অশ্বিনীকুমার স্বর্ণপদক
২০০৬ – জাতীয় কবিতা পরিষদ পুরস্কার
২০১০ সালে একুশে পদক
২০১৪ – জাতীয় পরিবেশ পদক
‘জীবনানন্দ দাশ পদক’, ‘অতীশ দীপঙ্কর স্বর্ণপদক’কেও ভূষিত হয়েছেন তিনি।