প্রেমিকাকে বিয়ে করে শাশুড়ির মামলায় কারাগারে প্রেমিক!

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ শায়েস্তাবাদ ইউনিয়নের কামার পাড়া এলাকার প্রাবাসী মোঃ বাবুল ব্যাপারীর মেয়ে শ্রাবনী আক্তার লামিয়ার অনেক আগেই প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন একই এলাকার মোঃ ফারুক ব্যাপারীর ছেলে ইরানের সঙ্গে। তবে তাদের বিয়ে মানেনি তার পরিবার। ঘটনাটি নিয়ে কাউনিয়া থানায় অপহরণ মামলা করেছেন শ্রাবণী আক্তার লামিয়ার মা শাফালী আক্তার।যাহার মামলা নম্বর-১২।
গত ১৭ই অক্টোবর মামলা দায়ের করার পর রোববার ঢাকার ড্যামরা থানার পশ্চিম বকসা নগর এলাকা থেকে প্রেমিক যুগলকে গ্রেফতার করেছে কাউনিয়া থানার এস আই মোঃ হুমায়ন কবির ।পরে সোমবার সন্ধ্যায় প্রেমিক ইরানকে ও শ্রাবণী আক্তার লামিয়াকে কাউনিয়া থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। জানা গেছে, শায়েস্তাবাদ ইউনিয়নের কামার পাড়া এলাকার মোঃ ফারুক ব্যাপারীর ছেলে ইরান(২৫) এর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে একই এলাকার বাবুল ব্যাপারীর মেয়ে শ্রাবনী আক্তার লামিয়ার।
প্রায় তিন বছর প্রেমের সম্পর্কের পর চলতি মাসের ১০ তারিখ প্রেমিক ইরানের হাত ধরে নতুন জীবনের সূচনা তৈরী করতে ঘর ছাড়েন শ্রাবণী আক্তার লামিয়া।এতে বেজায় চটে মেয়ের পরিবার, করলেন প্রেমিক ইরানসহ তার পরিবারের বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা। আর এতে হয়রানির শিকার হচ্ছেন ইরানসহ তার পরিবারের সদস্যরা।তবে ইরানের পরিবারের দাবী অপহরণ নয়,শ্রাবণী আক্তার লামিয়া তাদের ছেলের সাথে নিজ ইচ্ছাতেই ঘর ছেড়েছেন।
এব্যাপারে ঢাকার ড্যামরা এলাকার স্থানীয় সাংবাদিকদের দেয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রেমিকা শ্রাবণী আক্তার লামিয়া জানান, ভালবেসে মনের মানুষকে বিয়ে করতেই আমি ইরানের হাত ধরে ঘর ছেড়েছি।জোরপূর্বক ফুসলিয়ে নয়, স্বেচ্ছায় প্রেমিক ইরানকে কোর্টে নিয়ে স্বাক্ষীদের উপস্থিতিতে বিয়ে করেছি।কিন্তু আমার পরিবারের সম্মতি না থাকায় তারা থানায় মিথ্যে অপহরণ মামলা দায়ের করেছেন। আমাকে বিয়ে করায় ইরানের কোনো দোষ নেই।তিনি এ মিথ্যা মামলার করায় পরিবারের বিরুদ্ধে আলাদতে সাক্ষী দিবেন বলে জানান।অপহরণ মামলায় গ্রেফতার ইরানের বাবা ফারুক ব্যাপারী জানান,শুনেছি ওদের মধ্যে দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল।
তবে গত ১০তারিখ শ্রাবণী নিজ ইচ্ছায় ইরানকে ফোন করে বিয়ে করার জন্য চাপ সৃষ্টি করে।মেয়ের প্রাপ্ত বয়স হতে অল্প সময় বাকি ছিল তাই ইরান বোঝানোর চেষ্টা করে। তখন শ্রাবণী বলে, বিয়ে না করলে সে আত্বহত্যা করবে।তখন বাধ্য হয়ে সকলের অগোচরে তারা কোর্টে গিয়ে বিয়ে করে। পরবর্তীতে শ্রাবণীর পরিবার বিষয়টি জানতে পাড়লে আমাকে ওদের খুঁজে বের করার জন্য চাপ প্রয়োগ করে।অনেক খোঁজাখুঁজি করার পরে গত ১৪ই অক্টোবর ওদের দুজনকে আমাদের ঢাকায় ভাড়া বাসায় নিয়ে আসি এবং শ্রাবণীর পরিবারকে খবর দেই।পরবর্তীতে তারা বেশকিছু লোক নিয়ে আমার ঢাকার ভাড়া বাসায় আসে এবং শ্রাবণীকে নিয়ে যাওয়ার জন্য জোর করতে শুরু করে। একপর্যায়ে আমি তাদের কথায় সম্মতি দিয়ে তাদের একটি লিখিত দিয়ে মেয়ে হস্তান্তর করতে চাইলে তারা কিছুতেই তা মানতে নারাজ।
এরপর তারা লিখিত না দিয়েই জোর করে শ্রাবণীকে নিয়ে যেতে চাইলে আমরা বাঁধা প্রদান করলে শ্রাবণীর মামা সাইফুল ইসলাম বাবু,হুমায়ন কবির বাদল,শহিদ ব্যাপারী,রাজীব ব্যাপারী,কবিরসহ ৫/৬ জন আমাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। একপর্যায়ে আমার প্রতিবেশীরা আমাদের ডাক-চিৎকার শুনে আমাদের বাসায় আসলে তারা সকলে আমাদের বাসা থেকে পালিয়ে যায়।
এব্যাপারে কাউনিয়া থানার এস আই মোঃ হুমায়ন কবির বলেন, মেয়েটির সঙ্গে ছেলেটির প্রেমের সম্পর্ক। স্বেচ্ছায় বিয়ে করেছে বলে মেয়েটি স্বীকারোক্তি দিচ্ছে। তবে তার পরিবারের দেয়া স্কুলের কাগজ পত্র অনুযায়ী তার বয়স এখনো ১৮ হয়নি তাই তার বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়। এটা প্রেমের ফাঁদে ফেলে ফুসলানো বলে গণ্য হবে।তিনি আরও বলেন, মেয়েটির মা শেফালি আক্তার বাদী হয়ে ইরান ও তার ভাই ও বাবার বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা দিয়েছেন। আমরা মেয়েটিকে উদ্ধার ও আসামি ইরানকে গ্রেফতার করে আপাতত থানা হেফাজতে রেখেছি। মঙ্গলবার তাদের দুজনকে আদালতে প্রেরণ করা হবে বলে জানান তিনি।