বরগুনায় টাকা তুলছেন ১০ বছর আগে মারা যাওয়া নারী!
বরগুনা প্রতিনিধিঃ ১০ বছর আগে মারা গেছেন বরগুনা সদরের ৯ নম্বর এম বালিয়াতলী ইউনিয়নের ফালিসাতলী গ্রামের হক মিয়ার স্ত্রী কহিনুর বেগম।
অথচ গত ঈদুল ফিতরে টিপসহি দিয়ে তার নামে উত্তোলন করা হয়েছে দুস্থদের জন্য সরকারের বরাদ্দের টাকা। এ তালিকায় জীবিত যেসব মানুষের নাম রয়েছে তাদের অভিযোগ, তারা বরাদ্দের এ টাকা পাননি।
জেলার ৪২টি ইউনিয়নের বেশিরভাগ ইউনিয়নেই এমন ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুস্থদের ঈদ পালনের জন্য বরগুনায় পাঁচ কোটি ৮৫ লাখ ৫৪ হাজার ৯০০ টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার।
এর মধ্যে বরগুনা সদরের ৯ নম্বর এম বালিয়াতলী ইউনিয়নে পাঁচ হাজার ৬৫৮ জনকে ৪৫০ টাকা করে মোট ২৫ লাখ ৪৬ হাজার ১০০ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।
বালিয়াতলী ইউনিয়নের ফালিসাতলী গ্রামের হক কহিনুর বেগমের নাম তালিকার ৮৪৯ নম্বরে রয়েছে। তালিকা দেখা যায়, ১১ মে সকালে মাস্টাররোলে টিপসহি দিয়ে ঈদ উদযাপনের জন্য ৪৫০ টাকা তুলে নিয়ে যান কহিনুর। অথচ তিনি মারা গেছেন ১০ বছর আগে।
কোহিনুরের স্বামী হক মিয়া বলেন, ১০ বছর হলো আমার স্ত্রী মারা গেছে। তাহলে কী সে কবর থেকে উঠে এসে টিপসহি দিয়ে টাকা উঠিয়ে নিয়ে গেছে? আমাদের মতো গরিবদের টাকা কার পেটে যায়? কোথায় যায়? সরকারের তা খুঁজে দেখা উচিত।
তালিকায় উরবুনিয়া এলাকার মোস্তফা, আজিজ, মোনছের আশ্রাব ও নাসির এবং ফালিসাতলী এলাকার রাসেল, নাছিমা, রিনা ও হনুফাসহ পাঁচ হাজার ৬৫৮ জন সুবিধাভোগীর নাম রয়েছে। নামের পাশে সইও রয়েছে। তবে তারা কেউ টাকা পাননি।
তালিকায় নাম থাকা নাসির, আজিজ, আশ্রাব, রিনা নাছিমাসহ আরও কয়েকজন বলেন, টিপসহি তো দূরের কথা, তালিকায় যে আমাদের নাম আছে তা-ও আমরা জানি না। কে টাকা উঠিয়ে নিয়েছেন তা বলতে পারবো না।
এ বিষয়ে জানতে চেয়ে বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) বালিয়াতলী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ সেলিমের সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়নি। তবে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।
জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রমাণ মিললে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।