দেড় মাসেও রহস্য উদ্ঘাটন করতে পারেনি পুলিশ

NEWSNEWS
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  09:58 AM, 14 October 2021

দেড় মাসেও রহস্য উদ্ঘাটন করতে পারেনি পুলিশ

রাজধানীর সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারের অদূরে রাস্তার পাশে থেমে থাকা প্রাইভেটকারে পাওয়া দুই তরুণ দুর্ঘটনায় মারা গেছেন, নাকি তাদের কেউ হত্যা করেছিল- এখনও সে রহস্য উদ্ঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। এর মধ্যেই গত শনিবার রাতে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় গাড়িতে মিলেছে আরেক তরুণের মরদেহ। সেগুনবাগিচার ঘটনায় পুলিশ দাবি করেছে, রহস্য উদ্ঘাটনে তারা নানামুখী তদন্ত চালাচ্ছে।

গত ৩১ আগস্ট সকালে মেরামতের জন্য রাস্তার পাশে রাখা প্রাইভেটকারে রাকিব শেখ (২৭) ও সিয়াম হোসেনের (১৯) লাশ পাওয়া যায়। তারা ওয়ার্কশপ কর্মী ছিলেন। ঘটনার আগের রাতেও তারা ওই প্রাইভেটকারটি (ঢাকা মেট্রো গ-১৬-০৮৮৫) মেরামতের কাজ করছিলেন।

তদন্ত-সংশ্নিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, দু’জনের শরীরে বাহ্যিক আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তাই কীভাবে তাদের মৃত্যু হয়েছে, প্রাথমিকভাবে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এজন্য তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। ওই দু’জন গাড়িটির রঙের কাজ করছিলেন। ভেতরে গ্যাস নিঃসরণে তাদের মৃত্যু হতে পারে। কিন্তু একটি প্রাইভেটকারে জমে থাকা গ্যাসে দু’জন মারা যেতে পারেন কিনা, তাও তদন্তের আওতায় নেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া তারা গভীর রাতে কাজ করার সময় গাড়ির ভেতর মদ বা বিষাক্ত কিছু পান করেছিলেন কিনা, সেটিও তদন্তকারীদের মাথায় রয়েছে। ঘটনার পর সিআইডির ক্রাইমসিন ইউনিট যেসব আলামত সংগ্রহ করেছিল, সেগুলোর পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে।

শাহবাগ থানার ওসি মওদুত হাওলাদার সমকালকে জানান, তারা ঘটনাস্থল বা মরদেহে বাহ্যিক কোনো আলামত পাননি। তাই ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের অপেক্ষায় রয়েছেন। সেই প্রতিবেদন এখনও মেলেনি। এজন্য মৃত্যুর কারণ তারা নিশ্চিত হতে পারেননি।

ওসি বলেন, যেসব আলামত জব্দ করা হয়েছিল, সেগুলোর ফরেনসিক পরীক্ষা করা হচ্ছে। এসব আলামতের প্রতিবেদনও হাতে পাওয়া যায়নি। সবকিছু পাওয়া গেলে তদন্তে প্রাপ্ত তথ্যগুলো মিলিয়ে সিদ্ধান্তে আসা যাবে। পুলিশের অন্য এক কর্মকর্তা বলেন, এখন পর্যন্ত পাওয়া তদন্তে ধারণা করছি, গ্যাসের কারণে ওই দুই তরুণ নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে মারা গেছে। কিন্তু ময়নাতদন্ত ও ভিসেরা প্রতিবেদনে কী তথ্য আসে, সেই অপেক্ষা করছে পুলিশ। যদি হত্যার আলামত পাওয়া যায়, তাহলে ভিন্নভাবে তদন্ত শুরু হবে।

রাকিব শেখ ও সিয়াম হোসেন গাড়ি মেরামতের কাজ করলেও নিজস্ব কোনো ওয়ার্কশ তাদের ছিল না। পূর্বপরিচিত বিভিন্ন ব্যক্তি গাড়ি মেরামতের জন্য সেখানে গেলে রাস্তার পাশে রেখে তারা তা মেরামত করতেন। কাজ শেষে বিভিন্ন গাড়িতেই ঘুমাতেন। অনেক সময় মেরামত করতে আনা গাড়ি রাস্তার পাশে রেখে রাতে পাহারাও দেওয়া হতো। গত রোববার সেই ঘটনাস্থলে গেলে রাস্তার পাশে বেশ কয়েকটি গাড়ি মেরামত করতে দেখা যায় অন্য কর্মীদের। তাদের কাছে রাকিব ও সিয়ামের মৃত্যুর বিষয়ে জানতে চাইলেও কেউ কথা বলতে রাজি হননি।

ঘটনাস্থলের পাশেই ২০ নম্বর ওয়ার্ড কমিউনিটি পুলিশের অফিস। সেখানে কমিউনিটি পুলিশের এক সদস্য বলেন, যে গাড়িটি থেকে ওই দু’জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল, সেটি বেশকিছু দিন সেখানেই পড়েছিল। কয়েক দিন আগে পুলিশের সহায়তায় মালিক তা নিয়ে গেছেন। দু’জনের লাশ উদ্ধারের পর রাস্তার পাশে গাড়ি মেরামত বন্ধ হলেও সম্প্রতি তা আবার চালু হয়েছে।

আপনার মতামত লিখুন :