গৌরনদীতে হাতুড়ে ডাক্তারের অপচিকিৎসায় অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধুর মৃত্যু

NEWSNEWS
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  09:16 AM, 10 October 2021

গৌরনদীতে হাতুড়ে ডাক্তারের অপচিকিৎসায় অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধুর মৃত্যু
গৌরনদীতে নামধারী পল্লী চিকিৎসকের দেয়া গর্ভপাতের ওষুধ খেয়ে ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধু রেখা বেগমের (৩৫) মৃত্যু’র অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য একটি প্রভাবশালী মহল মাঠে নামার অভিযোগ উঠেছে।

মারা যাওয়া রেখা বেগমের একাধিক স্বজন জানান, উপজেলার ব্রাহ্মনগাঁও গ্রামের কাঞ্চন হাওলাদারের দ্বিতীয় স্ত্রী ও দুই সন্তানের জননী রেখা বেগম (৩৫) প্রায় পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। গর্ভপাত ঘটানোর জন্য কাঞ্চন (৬৫) তার স্ত্রীকে নিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে বার্থা বাজারের মৌ মেডিকেল হলে যান। ওই ফার্মেন্সীর মালিক ও কথিত পল্লী চিকিৎসক হেলাল আকন গর্ভপাতের জন্য রেখাকে ওষুধ খেতে দেয়। হেলালের পরামর্শে রেখা বৃহস্পতিবার চারবার ওই ওধুধ খেয়ে পেটের ব্যাথাসহ ভীষন অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন কাঞ্চন ওই রাতেই বিষয়টি মোবাইল ফোনে কথিত ওই ডাক্তারকে জানায়। তখন ওই কথিত ডাক্তার হেলাল ওষুধ নিতে লোক পাঠাতে বললে কাঞ্চন তার নাতিকে পাঠালে আবার নতুন করে ওষুধ খেতে দেয়। দ্বিতীয় দফায় দেয়া ওষুধ খেয়ে অন্তঃসত্ত্বা রেখা বেগম গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। গর্ভপাত হবে বলে কথিত ডাক্তারের পরামর্শে রেখাকে হাসপাতালে না নেয়া হলে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে নিজ বাড়িতে বসে অন্তঃসত্ত্বা রেখা মারা যায়।

খবর পেয়ে থানার একদল পুলিশ শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌছে মর্গে পাঠানোর জন্য রেখার মরদেহ থানায় নিতে চাইলে তারা (স্বব্জনরা) রেখার লাশ থানায় নিতে দেয়নি। থানায় লাশ নিতে ব্যথ হয়ে সেবনকৃত ওষুধের শ্যাম্পল ও কাঞ্চনের মোবাইল ফোন থেকে কথিত ডাক্তারের মোবাইল নাম্বর উদ্ধার করে পুলিশ থানায় নিয়ে যায়। পরবর্তীতে বাদজুমা মরহুমার জানাজা শেষে তার লাশ পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়।

মারা যাওয়া রেখার স্বামী কাঞ্চন হাওলাদার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ডাক্তার হেলালের বিরুদ্ধে মামলা করে কি হব? আমার স্ত্রী চলে (মারা) গেছে তাকে তো আর ফিরে পাওয়া যাবে না। তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করে নামধারী পল্লী চিকিৎসক হেলাল আকন বলেন, আমি গর্ভপাতের কোন ওষুধ দেই নাই। আমার দোকানে এসে পেটের ব্যাথার ৪টি ট্যাবলেট নিয়েছে। আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য পতিপক্ষরা আমার বিরুদ্ধে কুৎসা রটাচ্ছে।

এ ব্যাপারে গৌরনদী থানার ওসি আফজাল হোসেন জানান, কীটনাশক পাণে গৃহবধূ রেখা বেগমের আত্মহত্যার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তারা গিয়ে জানতে পান কীটনাশক পানে গৃহবধূ রেখার মৃত্যু হয়নি। রেখার মৃত্যুর ব্যাপারে তার (রেখা) স্বজনদের কোন অভিযোগ না থাকায় কোন আইনগত ব্যবস্থা নেয়া যায়নি।

এইচকেআর

আপনার মতামত লিখুন :