বরিশালের ৬৩৪ মন্ডপে চলছে দুর্গোৎসবের আয়োজন

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ১৫০ বছরের পুরানো বরিশাল মহানগরীর ফলপট্রি কালিমাতা ঠাকুরানীর মন্দিরে দূর্গাপূজা হয় ২৬ বছর ধরে। ব্যতিক্রমী প্রতিমা ও নয়নাভিরাম সাজসজ্জার জন্য ২৪ বার দুর্গোৎসবে কালিমাতা ঠাকুরানীর মন্দির শ্রেষ্ঠ দুর্গাপূজা মন্দিরের পুরস্কার পেয়েছে। এ বছরও মন্দিরটিতে চলছে দুর্গোৎসবের আয়োজন।এ মন্ডপের পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত কুমার দাস বলেন, করোনার কারণে নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যে থেকেও আমরা এবছরও নান্দনিক প্রতিমা ও সাজসজ্জার আয়োজন করেছি।
মায়ের পূজার আয়োজনে কোন ঘাটতি রাখতে চাইনা।শনিবার দুপুরে কালিমাতা ঠাকুরনীর মন্দিরে গিয়ে দেখা যায়, রাজবাড়ির প্রতিমা শিল্পী নিতাই পাল দারুন ব্যস্ত সহকর্মীদের নিয়ে। প্রতিমায় শেষ সময়ের রংতুলির কাজ করছেন তারা। নগরীতে ৬টি মন্ডপের প্রতিমা বানাচ্ছেন নিতাই পাল। এ কারণে অন্যদের তুলনায় তার ব্যস্ততা একটু বেশিই বলা চলে।কালিমাতা ঠাকুরনীর মন্দিরের মতো দুর্গোৎসব নিয়ে সাজ সাজ রব চলছে নগরীর অন্য মন্দিরগুলোতেও। পুকুরের মধ্যে বাঁশ-কাঠের বিশাল প্যান্ডেল করে প্রতিমা তৈরি করা হয়েছে কালিবাড়ি সড়কের পাষানময়ী কালিমন্দিরে। দেড়শ বছরের প্রাচীন এই মন্দিরে দূর্গাপূজা হয় ৫৮ বছর ধরে। পাষানময়ী কালিমন্দির প্রাঙ্গনে কথা হয় দূর্গাপূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় দত্তের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রতিমার সাজসজ্জার কাজ নিয়ে মহাব্যস্ত রয়েছেন শিল্পী সুজন পাল। তিনি আরও বলেন, আমরা এখন মন্দিরের সাজসজ্জা, পূজার উপকরণ কেনাকাটা ও প্রসাদের বন্দোবস্ত করতে ব্যস্ত সময় পার করছি। করোনাকে মাথায় রেখে সব আয়োজনই সীমিত পরিসরে করা হচ্ছে।পাষানময়ী কালিমন্দিরের পুরোহিত দুলাল ভট্রাচার্য্য বলেন, সোমবার মহাষষ্ঠী তিথিতে দেবী দূর্গা আসনে উঠবেন।
মঙ্গলবার মহাসপ্তমি পূজা। মহাঅষ্টমি বুধবার, বৃহস্পতিবার নবমী পূজা এবং শুক্রবার দূর্গাদেবীর দশমী পূজা শেষে দেবীর বিসর্জন হবে।১৯১০ সাল থেকে দূর্গাপূজা হয় নগরের ব্রজমোহন কলেজ সংলগ্ন ঐতিহাসিক শংকর মঠে। শংকর মঠ দূর্গাপূজা মন্ডপ কমিটির সভাপতি কিশোর কুমার দে জানান, করোনা সংক্রমণ অনেকটা কমে আসায় আমরা এবছর মন্দির প্রাঙ্গনে আলোকসজ্জা করব। অষ্টমী পূজার দিন দুপুরে সকল ভক্ত দর্শনার্থীদের মহাভোগ প্রসাদ বিতরণ করা হবে।বরিশাল মহানগর পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি তমাল মালাকার বলেন, করোনার কারণে নগরীর পূজা মন্ডপগুলোতে কোন প্রকার প্রতিযোগিতা কিংবা মেলার আয়োজন থাকবে না। সড়কেও আলোকসজ্জা হবেনা। যথাযথভাবে স্বাস্থ্য বিধি মানতে বলা হয়েছে নগরের ৪৪ পূজা মন্ডপ কমিটিকে।জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক মানিক মূখার্জী বলেন, এ বছর জেলায় ৫৯০টি মন্ডপে দূর্গাপূজা হবে। শনিবার জেলা পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন জেলার সকল মন্দির কমিটির নেতাদের নিয়ে সভা করেছেন। সভায় আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে সংশ্লিষ্ট থানাগুলোর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলায় সর্বাধিক ১৬১টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।এদিকে বরিশাল মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান বৃহস্পতিবার মহানগর পূজা কমিটির নেতাদের নিয়ে সভা করে সকল মন্ডপে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন। শনিবার জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার জেলার ৫৯০টি এবং মহানগরের ৪৪টি মন্দিরের স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য গেঞ্জি বিতরণ করেছেন।