বরিশালে নিত্যপণ্যের বাজারে আগুন
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
বরিশালের বাজারগুলোতে অধিকাংশ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে মানভেদে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২৫ টাকা বেড়েছে। একই ভাবে কেজিতে ৩০ টাকা বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। বেড়েছে আদা-রসুনের দামও।এছাড়া সবজির দাম চড়া। কোনো কোনো সবজির দাম দুই সপ্তাহে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।। মাছের বাজারেও আগুন। অপরিবর্তিত আছে চাল, ডাল, আটা-ময়দা, ভোজ্যতেল ও চিনির দাম । এমন পরিস্থিতিতে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।শনিবার (৯ অক্টোবর) নগরীর কয়েকটি বাজার ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে।কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা যায়, দুই সপ্তাহ আগে এক কেজি টমেটো ছিল ১২০ টাকা। আজ বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়। কাঁচামরিচের কেজি ছিল ১২০ টাকা। আজ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকায়।
প্রতি কেজি বেগুন ৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৭০ থেকে ৮০ টাকা, গাজর ১২০ টাকা থেকে বেড়ে ২০০ টাকা ও বরবটি ৬০ টাকা থেকে বেড়ে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া শসা ৪০ টাকা, ফুলকপি পিস ১০০ টাকা, বাঁধাকপি পিস ৬০ টাকা, শিম ১০০ টাকা, পটল, কাঁকরোল, করলা, ঢেঁড়স, চিচিঙ্গা, মুলা, মিষ্টি কুমড়া, ঝিঙে ৪০-৫০ টাকা ও পেঁপে ২০-২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে বাড়েনি আলুর দাম। কেজি ১৮ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।পুরান বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. জাকির হোসেন বলেন, বছরের এ সময়ে সবজির দাম একটু বেশি থাকে। সরবরাহও কম। পাইকারি বাজারে সবজির দাম বেড়ে যাওয়ায় কিছু সবজি বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ এখন ৭০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৬০ টাকা, আদা (চায়না) ১৪০ টাকা, রসুন (চায়না) ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।বাজারে প্রতি কেজি মসুর ডাল (বড় দানা) ৯০ টাকা, চিনি ৮০ টাকা, প্যাকেট আটা ৩৫ টাকা, ময়দা ৪৮ টাকা, খোলা সয়াবিন প্রতি লিটার ১৩২ টাকা এবং বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৪৫-১৪৮ টাকা।বাজারে চালের দাম কমেনি। প্রতি কেজি মিনিকেট চাল ৫৮-৬০ টাকায়, নাজির শাইল ৬৫-৭০ টাকায়, ভালো মানের বিআর-২৮ চাল ৫০-৫৪ টাকায়, পাইজাম ৪৮-৫০ টাকায় এবং মোটা গুটি ও স্বর্ণা চাল ৪৪-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পুরান বাজারে কেনাকাটা করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী ওবাইদুল ইসলাম জানান, তার সংসারে মাসে ছয় কেজির মতো পেঁয়াজ লাগে। গত মাসেও তাই কিনেছিলেন। কিন্তু দাম বেড়ে যাওয়ায় সেখানে আজ চার কেজি পেঁয়াজ কিনেছেন।তিনি বলেন, বাজারে সব পণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। শুধু নিম্ন আয়ের মানুষ নয়, মোটামুটি সচ্ছল পরিবারেও চাপ তৈরি করেছে নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বমূল্য।নগরীর পুরান বাজারের খুচরা মুদি দোকানি নিউ আজাদ স্টোরের মালিক সৈয়দ আজাদ আহম্মেদ বলেন, আড়তে পেঁয়াজের সংকট নেই। চাহিদার তুলনায় যথেষ্ট পেঁয়াজ আড়তে আছে। তবে কী কারণে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে তা বোধগম্য নয়। তবে শুনেছি সামনে দুর্গাপূজা। বর্ডার বন্ধ থাকবে। এ কারণে এক প্রকার অসাধু ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ মজুত করছেন। এতেই নাকি দাম বেড়েছে।
আড়ত থেকে বেশি দামে পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।এদিকে, দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৩০ থেকে বেড়ে ১৬০ টাকা, লেয়ার ২২৫ থেকে বেড়ে ২৪০ টাকা, সোনালি মুরগি ২৭০ থেকে বেড়ে ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।এছাড়া কেজি প্রতি ৫৮০-৬০০ টাকার মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে গরুর মাংস। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৭৫০-৮০০ টাকায়।এদিকে মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সরবরাহ কম। বিভিন্ন ধরনের মাছে কেজিতে ১০০-১৫০ টাকা বেড়েছে। বিক্রেতারা বলেছেন, মা ইলিশ রক্ষায় নিষেধাজ্ঞা চলছে। এ কারণে বাজারে মাছের সরবরাহ অনেক কমে গেছে। দামও বেড়েছে।