দুদকের মামলায় অভিযোগ গঠন, সাবেক এমপি আউয়ালের হাইকোর্টে আবেদন

খবর বাংলা ডেস্কঃখবর বাংলা ডেস্কঃ
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  01:30 PM, 16 July 2023

পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য এ কে এম এ আউয়ালের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা তিন মামলায় অভিযোগ গঠনের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়েছে। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন করা হয়।

রোববার (১৬ জুলাই) সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করে।এর আগে ২০২১ সালের ২০ জানুয়ারি সরকারি খাস জমি দখলের অভিযোগে পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য এ কে এম এ আউয়াল এবং তার স্ত্রী লায়লা পারভীনের বিরুদ্ধে করা তিন মামলায় অভিযোগপত্র দেয় দুদক। ওইদিন চার্জশিট অনুমোদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন দুদক সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার। এরপর ওই মামলায় অভিযোগ গঠন করেন আদালত।

২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় বরিশালে কমিশনের উপ-পরিচালক মো. আলী আকবর বাদী হয়ে আউয়ালের বিরুদ্ধে খাস জমিতে ভবন নির্মাণ, অর্পিত সম্পত্তি ও পুকুর দখলের দখলের অভিযোগে তিনটি মামলা করেন।

উপ-পরিচালক মো. আলী আকবর বাদী হয়ে ওই তিন মামলা করেন। এক মামলায় সাবেক এই সংসদ সদস্যের সঙ্গে তার স্ত্রী লায়লা পারভীনকেও আসামি করা হয়। পরে মামলার বাদী আলী আকবর নিজেই তদন্ত করে কমিশনে প্রতিবেদন দিলে অভিযোগপত্রগুলোর অনুমোদন দেওয়া হয় বলে জানান।

অভিযোগে বলা হয়, সরকারি খাস জমি দখল করে অবৈধভাবে তার স্ত্রী লায়লা পারভীনের নামে একটি দ্বিতল ভবন নির্মাণ করা, ভিপি ‘ক’ তফসিলভুক্ত ‘রাজার পুকুর’ নামে পিরোজপুরের আরও একটি পুকুর ভরাট করে অবৈধভাবে দখল করা এবং ‘ক’ তালিকাভুক্ত একটি সরকারি অর্পিত সম্পত্তি দখল করে সেখানে ‘আউয়াল ফাউন্ডেশন’ নামে একটি ভবন নির্মাণ করায় তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, মামলা তিনটি তদন্তের জন্য দুদকের উপ-পরিচালক মো. আলী আকবরকে তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ করা হয়। তদন্ত শেষে এজাহারে বর্ণিত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তদন্ত কর্মকর্তা তিনটি মামলাতেই পিরোজপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এ কে এম এ আউয়াল এবং তার স্ত্রী লায়লা পারভীনের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪২০/৪০৯/১০৯ ধারা এবং ১৯৪৭ সালের ২ নম্বর দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় চার্জশিট দাখিলের সুপারিশ করে প্রতিবেদন দেন।

তদন্ত কর্মকর্তার সুপারিশের আলোকে কমিশন তিনটি মামলায় চার্জশিট দাখিলের অনুমোদন দেয়।

আউয়ালের বিরুদ্ধে এক মামলায় অভিযোগ, তিনি অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যহারের মাধ্যমে ছয়জন ভুয়া ব্যক্তিকে ভূমিহীন দেখিয়ে সরকারি খাস জায়গা লিজ নিয়ে স্ত্রীর মালিকানা দেখিয়ে সেখানে তিনতলা ভবন নির্মাণ করেন। ভবনটি পিরোজপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে ভাড়া দেওয়া হয়েছে।

এই অভিযোগে আউয়াল ও তার স্ত্রী লায়লা পারভীনের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪২০/৪০৯/১০৯ ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় একটি মামলা করা হয় বলে জানান প্রণব।

একই প্রক্রিয়ায় পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি উপজেলা ডাকবাংলোর কাছে সরকারি খাস জমি অবৈধভাবে দখল করে আধুনিক ডাকবাংলো নির্মাণের অভিযোগে আউয়ালের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করা হয়।

আউয়ালের বিরুদ্ধে তৃতীয় মামলায় অভিযোগ, পিরোজপুর শহরের খুমুরিয়া এলাকার রাজারপুকুর নামে পরিচিত জায়গায় ৪৪ শতক সরকারি খাস জমি ঘিরে দেয়াল নির্মাণ করে দখলে রাখার অভিযোগে।

এ ছাড়া গত ৩০ সেপ্টেম্বর প্রায় ৪৪ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এ কে এম এ আউয়াল ও তার স্ত্রী লায়লা পারভীনের বিরুদ্ধে দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ পৃথক দুটি মামলা দায়ের করে দুদক।

মামলা দুটিতে এ কে এম এ আউয়ালের বিরুদ্ধে ৩৩ কোটি ২৭ লাখ ৮৯ হাজার ৭৫৫ টাকার এবং লায়লা পারভীনের বিরুদ্ধে ১০ কোটি ৯৮ লাখ ৯০ হাজার ৫০ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।

পরে এই দুই মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হয়।

পিরোজপুর-১ আসন থেকে ২০০৮ ও ২০১৪ সালে পরপর দুইবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে সংসদ সদস্য হন আউয়াল।

আপনার মতামত লিখুন :