শোলাকিয়ায় ঈদ জামাতে মানুষের ঢল

প্রতি বছরের মতো এবারও ঈদুল আজহার সবচেয়ে বড় জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে। বৃষ্টি উপেক্ষা করে ঈদের জামাতে অংশ নিতে মানুষের ঢল নামে।
বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) সকাল ৯টায় জামাত শুরু হয়। নামাজ শেষে দেশ, জনগণ ও মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ এবং শান্তি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
১৯৬তম ঈদের জামাতে ইমামতি করেন শহরের মারকাজ মসজিদের ইমাম মাওলানা হিফজরি রহমান খান।
এদিকে শোলাকিয়ায় ঈদের জামাতে অংশ নিতে দূরের যাত্রীদের জন্য শোলাকিয়া এক্সপ্রেস নামে দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ঈদের দিন সকাল থেকে কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ ও কিশোরগঞ্জ- ভৈরব রুটে এ দুটি ট্রেন চলাচল করছে।
জানা গেছে, ১৮২৮ সালে শোলাকিয়া মাঠে ১ লাখ ২৫ হাজার বা সোয়া লাখ মুসল্লি একসঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করেন। সেই থেকে এ মাঠের নাম হয় ‘সোয়া লাখিয়া,’ যা এখন শোলাকিয়া নামে পরিচিত।
শোলাকিয়া ঈদগাহে লাখো মুসল্লির সঙ্গে এক কাতারে দাঁড়িয়ে ঈদের নামাজ পড়লে বেশি সওয়াব পাওয়া যায়-এমন ধারণা থেকে প্রতি বছর এখানে দেশ-বিদেশের কয়েক লাখ মুসল্লির ঢল নামে। বংশ পরম্পরায় এ মাঠে নামাজ পড়ে আসেন অনেকে। ঈদের দিন বিশাল মাঠ মুসল্লিতে কানায় কানায় ভরে ওঠে। মাঠের বাইরে রাস্তায় ও আশপাশে নামাজ আদায় করেন অনেকে।
২০১৬ সালে শোলাকিয়া মাঠের কাছে জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছিল। সে বিষয়টি মাথায় রেখে প্রতিবছর বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়। এবারও ঈদের জামাত নির্বিঘ্ন করতে আগে থেকে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়। চার স্তরের নিরাপত্তা বলয়ে র্যাব-পুলিশের পাশাপাশি মোতায়েন ছিল ৫ প্লাটুন বিজিবি।
জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ রাসেল শেখ জানান, মাঠে ও বাইরে নিরাপত্তার কোনো নেই। পুলিশের চারটি নিরাপত্তা চৌকি পার হয়ে প্রবেশ করতে হয় ঈদগাহে। সিসি ক্যামেরায় মনিটর করা হচ্ছে মাঠের ভেতর ও চারপাশ। মাঠের চারপাশে রয়েছে ছয়টি ওয়াচ টাওয়ার। চারটি শক্তিশালী ড্রোন ক্যামেরা পর্যবেক্ষণ করছে চারপাশ। পোশাকি বাহিনীর পাশাপাশি গোপনে নজরদারি করছে পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন।
জানা গেছে, ১৯৫০ সালে শোলাকিয়া ঈদগাহের জন্য জমি ওয়াকফ করার ২০০ বছর আগে থেকে শোলাকিয়া মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রায় সাড়ে ৬ একর আয়তনের শোলাকিয়ায় প্রতি বছর ঈদের জামাতে কয়েক লাখ মুসল্লির ঢল নামে। তবে কোরবানির আনুষ্ঠানিকতার কারণে ঈদুল আজহায় লোক সমাগত অনেক কম হয়।