বরিশালে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে নবজাতকের মৃত্যুহার
বরিশালে সম্প্রতি নবজাতক শিশুর মৃত্যুর হার অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। সেখানে প্রতিদিন গড়ে মারা যাচ্ছে ৫ শিশু। শিশুমৃত্যুর জন্য পারিবারিক অসচেতনতা প্রধানত দায়ী বলে জানান চিকিৎসকরা। আর শিশুমৃত্যু হার কমিয়ে আনতে অভিভাবকদের সচেতন হওয়ার আহ্বান স্বাস্থ্য বিভাগের।
শিশুমৃত্যু নিয়ে শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজের শিশু বিভাগের অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার সাহা জানান, আগাম জন্মদান, মায়ের অপুষ্টি, পারিবারিক অসচেতনতা, হাসপাতালে না এসে ক্লিনিকে সন্তান প্রসবসহ নানা অসচেতনতার কারণে শিশুদের মৃত্যুঝুঁকি বাড়ছে। ফলে নিয়মিতই সদ্যোজাত শিশু মারা যাচ্ছে।
শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের শেখ রাসেল স্ক্যানুতে (নবজাতকের সুরক্ষায় বিশেষায়িত স্পেশাল কেয়ার নিউবর্ন ইউনিট) চিকিৎসাধীন বরিশাল নগরীর পলাশপুরের দিনমজুর মুসা হাওলাদার ও জোৎসা বেগমের একমাত্র সন্তান। ৮ মাস হতে না হতেই হঠাৎ প্রসববেদনা উঠলে বাসায় বসেই জোছনা বেগমের শরীরে স্যালাইন পুশ করে স্বজনরা। বাসাতেই শিশুটি স্বাভাবিক প্রসব হলেও কোনো কান্না না করায় দ্রুত নিয়ে আসা হয় হাসপাতালে । ১২ দিন ধরে চিকিৎসা চললেও এখনও কোনো উন্নতি হয়নি শিশুটির।
শিশুটির ফুপু নূপুর বেগম সময় সংবাদকে বলেন, আমরা কোনো কিছু বুঝার আগেই বাচ্চা প্রসব হয়েছে। হাসপাতালে আনা উচিত ছিল। তাহলে শিশুটির এমন কষ্ট করতে হতো না।
এমন নানা সমস্যা নিয়ে জন্মগ্রহণ করা শতাধিক শিশু বর্তমানে ভর্তি আছে শেবাচিম হাসপাতালের শেখ রাসেল স্ক্যানুতে। আরেক রোগীর বোন নুপুর নামে একজন জানান, একটি ক্লিনিকে মাত্র ৭ মাস বয়ছে সিজার করে শিশুর জন্ম দিয়েছে তার বোন। এখন শিশুটি প্রিম্যাচিউর হওয়ায় এখানে চিকিৎসা চলছে।
আছমা নামে আরেকজন বলেন, এক ক্লিনিকের রেগুলার চেকআপে গেলে সেখানে বসে সন্তান প্রসব করেন আমার ভাবি। জন্মের পর থেকেই শিশুটি নানা সমস্যায় ভুগছে। তাই এখানে নিয়ে এসেছি। বরিশাল স্বাস্থ্য বিভাগের এক সমীক্ষায় ওঠে এসেছে এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে, গত এক বছরে বরিশালে মারা গেছে ১ হাজার ৪১৫ সদ্যোজাত শিশু। সেই হিসেবে প্রতিদিন গড়ে মারা যাচ্ছে ৫টি শিশু।
শিশুমৃত্যু হার কমিয়ে আনতে নানা পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানিয়ে অভিভাবকদের সচেতন হওয়ার পরামর্শ স্বাস্থ্য বিভাগের উপপরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল।শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তথ্যমতে, গত এক সপ্তাহে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৮ দিন পর্যন্ত বয়সের ১৭ জন শিশুর মারা গেছে শেবাচিম হাসপাতালে।